সানজিদা,
আমার সবথেকে কাছের আর বিশ্বস্ত বেস্টফ্রেন্ড হলো আমার ডায়রী গুলো। ডায়রী গুলো আমার মনের আশা, ইচ্ছা আর স্মৃতি গুলো জমিয়ে রাখতো সব সময়। সুখ, দুঃখ সব কিছু ডায়রী রেখে দিত যত্ন করে। কিন্তু কিছুদিন ধরে ডায়রী গুলোর সাথে আমার দুরত্ব টা বেড়ে গেছে। প্রতি দিন লিখতাম আর এখন সেখানে মাসে একবার কিংবা দুবার লেখা হয়। কেন জানি ডায়রি গুলো থেকে নিজেকে দুরে রাখতে আজকাল ভালো লাগছে, জানি না কেন। হয়তো নতুন স্মার্টফোন টা হওয়ার জন্য তবে এটা হওয়ার কথা না, ডায়রি ছিলো আমার সঙ্গী, সে এখন দুরে। একটা সময় ছিল যখন রাত্রি বেলা প্রতিদিন বালিশের কাছে ডায়রি টা রাখতাম আর ঘুম ভেঙ্গে গেলে নতুন স্বপ্নের প্রহরে তাকে সঙ্গী করতাম। বন্দি করতাম রাতের অন্ধকার থেকে ভোরের আলোকে।
ঘুমের আগে আমার বই পড়ার অভ্যাস ছিল। প্রত্যেক দিন আমার বিছানার একটা প্রান্তে বই,নোটস্, ডায়রি, সংবাদ পত্রের খেলার পাতাটা আর বিনোদন এর পাতা টা পড়ার জন্য রেখে দিতাম। আমার আসলেই ধৈর্য্য টা অন্যরকম। রাত জেগে খুব কম মানুষই এইগুলো করে বোধহয়। আমি ওতোটা রাত ও জাগতাম না, ১১টা বাজতেই ঘুমিয়ে পড়তাম শান্ত মেয়ের মত। আজকাল এটাও বেড়েছে। মাঝে মধ্যে মাঝরাতে প্রায় বারোটা বা তার পরে আমার পড়ার টেবিলের জানালার কাছে গিয়ে বসতাম, কখনো রুমের লাইট টা অফ করে দিতাম যাতে চাঁদের আলোয় ঘরটা উজ্জ্বল হয়। লাইট অফ করে দিলে জানালা দিয়ে চাঁদের আলো আসতো রুমের মধ্যে, মিটিমিটি আলোতে চাঁদ উপভোগ করতাম আর জীবন নিয়ে রচনা লিখতাম মনের মধ্যে। খুবই হ্যাপি থাকতাম সারাক্ষণ, কোন প্রত্যাশা ছিলো না কারো প্রতি, নিজের আকাঙ্ক্ষা গুলো সীমিত ছিলো।
প্রত্যাশা গুলো পরিবারের সাথেই সীমাবদ্ধ ছিলো। আর পরিবার থেকে কখনোই হতাশ হইনি আমি।
আমার গল্প শুনে যে যাই বলুক আমার এমনই ভালোলাগে। তখনকার একটা অভ্যাস এখনও আছে।রাতে শুতে যাওয়ার আগে সাজতে বসা। ঘুমানোর আগে আয়নার সামনে নিজেকে আবিস্কার করতাম নতুন সাজে। প্রতিদিন নতুন ভাবে সাজতাম, আবার মুখ ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। তবে এখনকার জীবন টা একটু বেশিই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। এখন শুধু সেলফি তোলার জন্যই এসব। আমার মোবাইলে কম করে হলেও ২হাজার সেলফি আছে এখন, শুধু নিজের সেলফি।
আমার মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা টা সেই ছোট্ট বেলা থেকেই। রাতে যখন বইগুলা পড়তাম তখন এখানে মেডিকেলে পড়ার ইন্সপাইরেশন মূলক বই ও এড করতাম। যেগুলো আমাকে পড়াশোনায় আরো মনোযোগী করতে সাহায্য করতো। আমি এখনও কার্টুন দেখতে ভালোবাসি, গ্যালারি জুড়ে কার্টুন ভিডিও তে ভরা। রাতে গল্পের বই পড়তে খুব ভালোলাগতো, এখনো সময় পেলে পড়া হয়। এইসব পড়ে মনের শান্তি তে কালেমা পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়তাম।
তবে হ্যাঁ, নাইনে উঠে আমার মনে একটু কবি কবি ভাব আসে যদিও সেরকম টা না। আমি তাসকিন এর বিগ ফ্যান ছিলাম আর ঐখান থেকে সে বিগ ক্রাশ হয়ে যায় । তখন রাত জেগে একটু রোমান্টিক টাইপ গল্প, উপন্যাস পড়তাম।
কিন্তু কোনদিন ভাবিনি কারো প্রেমে পড়বো। আসলে আমি রিলেশন পছন্দ করতাম না। কিন্তু তবুও কখন যে প্রেমে পড়ে গেলাম টেরই পেলাম না। তারপর থেকেই সব পাল্টে গেছে আমার। সব কিছু উলটপালট করে দিয়েছিলো সে। কল্পনার জগতটাই ভালো ছিলো আমার।
খুব ভালো ছিল সময় গুলো, আব্বুর সাথে সব শেয়ার করা,হাসি ঠাট্টা আনন্দ আর সবসময় ছোট ভাইয়ের সাথে ঝগড়ার জন্য আম্মুর বকা। বেশ ছিল সময়টা।
Hi @toushik, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON