এই ২০২৩ সালে এসে জুতো পড়ে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।
হ্যালো আমার প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমি মোঃ রাসেল আজ আপনাদের সাথে মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালী এদের জুতা ব্যবহারের পার্থক্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আমরা সকলে একটি সমাজে বসবাস করি, আর এই সমাজে বিভিন্ন ধরনের মানুষ বাস করে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে বিভিন্ন কর্মের লোক বাস করে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর লোক বাস করে তার মধ্যে কেউ বিত্তশালী কেউ মধ্যবিত্ত আবার কেউবা নিম্নবিত্ত।
বিভিন্ন শ্রেণীর লোক বলতে আমরা কি বুঝি যেমন,
- বিত্তশালী
আমরা আমাদের সমাজের বিত্তশালী বলতে তাদেরকে বোঝায় যাদের প্রচুর পরিমাণে অর্থ আছে গাড়ি বাড়ি আছে টাকার কোন অভাব নেই তাদেরকেই আমরা সাধারণত বৃত্তশালী বলি অর্থের দিক থেকে।
- মধ্যবিত্ত
আমরা মধ্যবিত্ত ওইসব শ্রেণীর লোকদেরকে বলি যাদের প্রচুর পরিমাণে অর্থ নেই মোটামুটি এবং গাড়ি নেই বাড়ি আছে থাকার মত কিন্তু এদের আত্মসম্মান প্রচুর তারা জীবন দিবে কিন্তু আত্মসম্মানের গায়ে এক ফোঁটা আজ রাখতে দিবে না এবং তারা সব শ্রেণীর লোকের সাথে ওঠাবসা করে থাকে মূলত আমরা তাদেরকেই বলে থাকি মধ্যবিত্ত।
- নিম্নবিত্ত
নিম্নবিত্ত লোকেদের না যে টাকা-পয়সা না আছে বাড়ি গাড়ি না আছে আত্মসম্মান। সোজা বাংলায় যদি বলতে যাই যারা আমাদের সমাজের বিভিন্ন বস্তিগুলোতে বসবাস করে তাদেরকেই আমরা নিম্নবিত্ত কাতারে রাখি। দিনশেষে তারাও মানুষ তাই তাদেরকে নিয়েও আমাদের সমাজ।
- বৃত্তশালী ও নিম্নবিত্ত
এই দুই শ্রেণীর লোকেদের স্বভাব একটি জায়গায় অনেকটা মিল আছে। যেমন, বৃত্তশালী লোকেরা কোন কাজ করার আগে তেমন একটা চিন্তাভাবনা করে না হোক সেটা ভালো হোক সেটা খারাপ কারণ তাদের প্রচুর পরিমাণে অর্থ আছে খারাপ হলে সেটাকে টাকা দিয়ে ভালো করে নিতে পারবে এবং তারা যে কারো কাছ থেকে যেকোনো কিছু চাইতে পারে এবং চাইলেও তা পাওয়া সম্ভব না বেশি থাকে কারণ সে বৃত্তশালী ঘুরেফিরে তার কাছে কোন না কোনদিন আসতেই হবে কিছু না কিছুর জন্য।
এবং নিম্ন শ্রেণীর লোকেরাও একই রকম কাজ করতে পারে। যেমন, তারা কোন কিছুকে ভয় পায় না কারণ তাদের হারানোর মতোই কিছুই নেই এবং কারো কাছে কিছু চাইতো দ্বিধাবোধ করে না কারণ তার কাছে তো কিছুই নেই লজ্জা করে কি করবে এবং তাদেরকে সবাই সবকিছু দিতেও রাজি থাকে সবাই তো মনে করে এদের তো কিছু নেই এরা তো গরিব এদেরকে একটু সাহায্য করি।
অপরদিকে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা না কারো কাছে কিছু চাইতে পারে, না পারে ইচ্ছেমতো কিছু করতে লোক লজ্জার ভয়ে। এরা দুবেলা না খেয়ে থাকবে কিন্তু ঠিকই গায়ে দেওয়া জামাটা আয়রন করে আয়রন করে গায়ে দিবে। তাই তাদের পোষাক-আশাক দেখে কেউ সহজে সাহায্য সহযোগিতাও করে না কারণ উপরে দেখতে তো ভালোই দেখায় মনে হয় কোন কিছুরই অভাব নেই অথচ তার যে পেটে দুবেলা ভাত নেই সেই কথাটা মুখ ফুটে কারো সাথে বলতেও পারে না আত্মসম্মানের কারণে।
প্রিয় বন্ধুরা, এতক্ষণে আমরা বুঝতে পেরেছি মধ্যবিত্ত, বৃত্তশালী ও নিম্নবিত্ত মানুষের পার্থক্য। এখন আমরা জানবো বৃত্তশালী ও মধ্যবিত্ত লোকেদের জুতার ব্যবহার।
- বিত্তশালী
প্রথমেই আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম বিত্তশালী মানুষের টাকার অভাব নেই। তাদের জুতার দাম হয় সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকারও বেশি। তাই তাদের লাইফস্টাইলটাও সবার থেকে আলাদা। তারা সব সময় ড্রেসের সাথে ম্যাচ করে জুতা ব্যবহার করে। বিত্ত শালী লোকেরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের জুতা ব্যবহার করে এই যেমন,
অফিস আদালতের জন্য এক ধরনের জুতা ব্যবহার করে। বাসায় চলাফেরার জন্য এক ধরনের জুতা ব্যবহার করে। বাইরে চলার জন্য এক জোড়া জুতা ব্যবহার করে। তাদের প্রত্যেকটা কাজের জন্য আলাদা আলাদা কিভাবে জুতা ব্যবহার করে থাকে।
আর আমার মনে হয় না তারা এসব জুতোগুলো এক দুমাসের বেশি ব্যবহার করে। এবং এদের জুতোগুলো নষ্ট হয় অফিস টু বাসা বিভিন্ন পার্টি অনুষ্ঠান করে এবং এসির বাতাসের মধ্যে থাকতে থাকতে জুতাগুলোর টেম্পারলেস হয়ে যায় তাই তারা হয়তো বা বেশি দিন ব্যবহার করতে পারেনা।
বিত্তশালী লোকেরা তো ভুলেই যান তারা জুতা পড়ে কবে কখন হেঁটেছে কারণ তারা তো সবসময় গাড়িতে চড়ে চলাফেরা করে তাদেরকে তো পায়ে হেঁটে কোথাও যেতে হয় না।
- মধ্যবিত্ত
আমি প্রথমেই বলেছিলাম মধ্যবিত্ত লোকেদের আত্ম সম্মানবোধ বেশি এবং তারা সকল শ্রেণীর লোকেদের সাথে ওঠাবসা করে। তাই তাদের সব ধরনের ক্লাস মেইনটেইন করতে হয়। এই যেমন ধরেন সে একজন বৃত্তশালীর সাথে কাজ করতে হচ্ছে তখন তো তার সামনে নষ্ট জামাকাপড় জুতো পড়ে যেতে পারে না কারণ তখন সে তাকে হয়তো বা তার প্রাপ্য মর্যাদাটুকু দিবে না এমনও হতে পারে তার কাপড়-চোপড় দেখে তার সাথে কথাও না বলতে পারে কারণ বিদ্যশালীরা তো তাদের ক্লাস মেইনটেইন করার চেষ্টা করে।
এবং তাদের যখন নিম্নবিত্ত মানুষদের সাথে চলতে হয় তখনও তারা খারাপ পোশাক পড়ে যেতে পারে না কারণ তখন তারাও তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিবে না। তাই তাদেরকে সব সময় পোশাক আশাকের দিকে বেশি নজর দিতে হয়। পেটে ভাত না থাকলে কেউ দেখবে না, কিন্তু শরীরের পোশাকটা যদি ভালো না থাকে সবাই দেখতে পাবে।মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা একজোড়া জুতা কিনেন সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ 2000 টাকার মধ্যে।
এবং তাদের জুতাগুলোও খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় তাদের চলাচলের জন্য কারণ তারা তো কোথাও চাইলে গাড়িতে যেতে পারে না বেশিরভাগ সময় তাদেরকে পায়ে হেঁটে সব জায়গায় যেতে হয়। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মানুষদের তো প্রাইভেট গাড়ি কেনা স্বপ্নের মত তাই তো যেখানেই যাক না কেন পায়ের গাড়িতে চলে যায়।
আর এই কারণে তাদের পায়ের জুতা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু পরিবর্তন করেন খুব দেরিতে ওই ছেঁড়া জুতা কে রিপেয়ার করে পড়তে থাকে যতক্ষণ না আর রিপেয়ার করার অবস্থা না থাকে।
আমি এমনও কিছু মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি কে দেখেছি যারা তাদের সন্তানের স্কুলের জুতা কেনার জন্য মাসিক বাজারের ১০ দিনের বাজারি কাট করে তার সন্তানের স্কুলের জুতা কিনেছে।
তো বন্ধুরা আজকে আমার এই পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
যাওয়ার আগে একটি কথা বলতে চাই, আপনার ঘরে যদি বৃদ্ধ বাবা-মা থাকে তাদেরকে একটু যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে।
যাদের বাবা-মা অসুস্থ আছেন তাদের জন্য আমি আমার সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সকল বাবা মাকে সুস্থ করে দেন আমিন।