ছাড়ো, তরকারি পুড়ে যাচ্ছে!
ছাড়ো তরকারি পুড়ে যাচ্ছে'র চেয়ে "পুড়লে পুড়ুক" ইজ ওয়ে বেটার বেবী। বলেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আকাশ। কিছুক্ষন ধ্বস্তাধস্তি করি সুঠাম দেহে নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হল নীল।
বিধ্বস্ত শরীর এলোমেলো চুল আর অগোছালো শাড়ি ঠিক করতে করতেই দ্রুত রান্না ঘরে গিয়ে দেখে তরকারি পুরে ছাই। দু হাত কমরে ঠাঁই করে দাঁড়িয়ে পুঁড়িয়ে যাওয়া তরকারি দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। পুঁড়িয়ে যাওয়া তরকারির করাই হাতে নিয়ে আকাশের কাছে এসে দেখো তোমার সোহাগ আর ভালোবাসার হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
জ্বলে, পুড়ে ছাই হবে যত বার, কয়েকশত কোটি গুণ ভালোবাসা বাড়বে ততবার। হা হা হা, আচ্ছা তোমাকে টেনশন নিতে হবে না আর। আমি অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছি। ফুডপান্ডা কিছুক্ষনের মধ্যেই হাজির হয়ে যাবে।
এভাবেই চলছে আকাশ নিজের সংসার। ফোন বেজে উঠলো নীলের।
হ্যালো, কে বলছেন?
আমি সজীব।
নামটা শুনতেই নিলের শরীরটা কেঁপে উঠলো। কোন সজীব?
আমাকে চিনতে পারতেছো না, নাকি চেনেও না চেনার ভান করছো। আমার কন্ঠ এতো দ্রুত ভূলে গেলে। এটা তো আমার বিশ্বাস হয় না।
এইসব শুনতেই ফোন রাখে দেয় নীল। নীল তাকে অনেক কষ্টে মষ থেকে বার করে দিয়িছে। আকাশ তার ভালোবাসা দিয়ে তার ক্ষত স্থান পূরণ পরেছে। আকাশ এখন তার হৃদয়ের সব টুকু জুড়ে রয়েছে। সে আর কোন ভাবেই আকাশের জায়গায় অন্য কাউকে রাখতে চায় না আর রাখা সম্ভব ও না। যে চলে গেছে তাকে ভূলে যাওয়াটাই উত্তম। রাত দিন তার কথায় মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
কিছুদিন পর আবার সজীবের ফোন। রিসিভ করেই নীল বললো আমাকে প্লিজ আর ডিসটার্ব করবা না। আমি তোমাকে ভূলে গেছি। অতীত নিয়ে আর আমি ভাবতে চাই না। আমি এখন আকাশের সাথে আছি ভালো আছি।
আকাশ লক্ষ করে নীল বেস কিছুদিন ধরে উদাস হয়ে আছে। তার চলাফেরার মধ্যে আগের মত চঞ্চলতা নেই। এখন ফোনে খুব বেশিই আসক্ত হয়ে পরেছে। মাঝে মধ্যেই একা একা ফোন দেখে আর হাসতে থাকে। আকাশ খুব ভালোই করেই পযার্বেক্ষন করছে তার আগের মত তার সাথে ভালোভাবে কথা বলে না। মেজাজ সব সময় খিটখিটে দেখা যায়।
ধীরে ধীরে সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা চলে আসছে। আকাশের কথা আর সহ্য করতে পারে না। সম্পর্ক টিকায় দায়।
আকাশের পকেটে সব সময় একটা চিরকুট থাকে। সেই চিরকুটটা কখনো নীলচে দেখতে দেয় নিই। সেটা নিয়েও প্রায় ঝোগরা লেগে যেত। সম্পর্কে যখন তিক্ততা চলে আসে তখন ছোট ছোট বিষয় গুলোও বড় আকার ধারণ করে। আজ ঝোগরার মাত্রা অতিক্রম করেছে। আজকে নীল তাকে একটি কথা বলতে চায়। বেশ কিছুদিন ধরেই বলতে চাচ্ছিল কিন্তু বলতে পারছিল না। সে আকাশের কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। সে আর তার সাথে সম্পর্ক এগোতে চায় না।
আকাশ তার কথা শুনে নির্বাক হয়ে বাসা থেকে বার হয়ে আসে। কার নিয়ে বেরিয়ে পরে অজানা গন্তব্যের দিকে। যখনেই নীলের সাথে ঝোগরা হয় তখনেই সে বেরিয়ে আসতো এভাবেই। তখন নিশুতি রাত হাইওয়েতে শুনশান নিরবতা আর ভ্যাপসা গরম। সূর্য ডুব দিলেও পারে নিই উত্তাপের লাগাম ধরে টান দিতে।
ড্রাইভিং সিটে বসে দু পা শক্ত হয়ে যাচ্ছে আকাশের। যেন দু পায়ের শিরা উপশিরা গুলো শক্ত দড়ির নেয় বেধে ধরেছে। "আমি দু মাস ধরে তোমাকে কিছু বলতে চাচ্ছি তুমি শুনবে। কয়েকবার চেষ্টা করঃও বলে উঠতে পারছি না। আমি তোমার কাছে ডিভোর্স চাই।" নিলের এই কয়টা লাইন তার মাথায় বজ্রের মত আঘাত করছে।