বিষাক্ত কিছু খাবার (পর্ব-১)

সবসময়ই আমরা নাম জানা বা অজানা অনেক খাবার খেয়ে থাকি। কিন্তু এসব খাবারে অনেক সময় মরনব্যাধি রোগ থাকে, বিষ থাকে এবং মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। আমাদের অজ্ঞতার কারণে না বুঝেই দিব্বি এসব খাবার খেয়ে যাচ্ছি। তবে বিষাক্ত এসব খাবারের নাম জানা থাকলে আমরা সচেতন হয়ে আমাদের জীবন বাঁচাতে পারি। STEEMIT বন্ধুদের জন্য বিষাক্ত এমন ২৯টি খাবারের তালিকা কয়েকটি পর্বে প্রকাশ করা হবে-

D54324 (1).jpg

১. টমেটো:
টমেটো একটি দৃষ্টিনন্দন শীতের সবজি। এটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সবজি হিসেবে টমেটোর জুড়ি অনেক। টমেটো আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায়। এটি যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, ঠিক একইভাবে রান্না করে বা রান্না সুস্বাদু করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। টমেটোর কাণ্ড কোমল ও রসাল। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে টমেটো একটি ফল হলেও, সবজি হিসেবেই সারা বিশ্বে টমেটো পরিচিত। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ চাহিদা। তবে আলুর মতোই টমেটোর পাতা ও কাণ্ডেও গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। কাঁচা সবুজ টমেটোতেও একই উপাদান আছে। তবে অল্প পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই।

D54324 (4).jpg

২. আলু:
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু থাকে না এমন লোক খুব কমই দেখা যায়। সহজলভ্যতা, শর্করা, আর নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য প্রস্তত করা যায় বিধায় বিশ্বব্যাপী আলুর চাহিদা ব্যাপক। তবে সবুজ দাগযুক্ত আলু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের আলু অর্থনৈতিক বিবেচনায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই উত্তোলন করা হয়। এতে সোলানাইন নামক বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা রান্না এবং পোড়ানোর পরও দূর হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আলুর সবুজ অংশ ফেলে দেওয়া সবসময় নিরাপদ নয়। বরং এই ধরনের আলু ব্যবহার না করাই উত্তম। এছাড়া আলুর পাতা ও কাণ্ডে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে। বাসায় অনেক দিন পর্যন্ত আলু রেখে দিলে এর মধ্যে গ্যাঁজ হয়ে যায়। এই গ্যাঁজে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা আলোর সংস্পর্শে বৃদ্ধি পায়। এজন্য আলু সবসময় ঠাণ্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রাখতে হয়। সবুজ ও গ্যাঁজ হওয়া আলু খেলে ডায়রিয়া, মাথাব্যাথা, এমনকি কোমায় চলে যেতে পারে। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

D54324 (2).jpg

৩. শিম বিচি:
অনেকেরই পছন্দের সবজির তালিকায় আছে শিমের নাম। এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। শিম, শিমের বিচি এবং শিমের পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়। শিমের বিচিতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার প্রোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। এতে কোনো কোলেস্টেরল নেই। এনার্জি বা শক্তির জন্য শিমে রয়েছে শতকরা ২০ ভাগ প্রোটিন ও উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট। তবে শিমের বিচিতে ফাইটোহিমাটোগ্লুটানিন নামক বিষ থাকে। যা আপনাকে মারাত্মক অসুস্থ্য করে দিতে পারে। যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রান্নার পূর্বে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে তারপর রান্না করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক উপাদান আর থাকবে না।

D54324 (3).jpg

৪. লাল মটরশুটি:
স্বাস্থ্যসম্মত সবজি হিসেবে মটরশুটির খ্যাতি রয়েছে। লাল মটরশুটি যুবকদের একটি প্রাকৃতিক বসন্ত বলা হয়ে থাকে। এটি সারাবছর প্রস্তুতির জন্য আপনি প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি পাবেন। খাদ্যের ক্রমাগত খরচ হৃদয়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে, ওজন হারাবে, টক্সিন অপসারণ করবে। কিন্তু লাল মটরশুটিতে রয়েছে বিষাক্ত পদার্থ। আর এ বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এ ধরনের মটরশুটিকে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সেদ্ধ করতে হয়। সেদ্ধ করা ছাড়া রান্না করলে এটি দুই থেকে তিনগুণ বেশি ক্ষতি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তাপ ক্ষতিকর সক্রিয় পদার্থকে ধ্বংস করে। ফলে তা আমাদের শরীরের কোষে আক্রমণ করতে পারে না। আর তাই এ মটরশুটি রান্নার আগে অবশ্যই সেদ্ধ করে নিতে হবে।

D54324 (5).jpg

৫. আপেল:
প্রবাদে আছে– “An apple a day will keep the doctor away” অর্থাৎ আপনি যদি প্রতিদিন একটি আপেল খান তাহলে আপনাকে আর ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। আপেলের মধ্যে এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে, যা কুয়েরসেটিন নামে পরিচিত। এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং আমাদের শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু আপেলের বিচিতে হাইড্রোজেন সায়ানাইড নামক বিষ থাকে। আমরা সাধারণত আপেলের বিচি খাই না এবং একটা আপেলে খুব বেশি বিচি থাকেও না। কিন্তু আপেলের বিচি কোন কারণে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আপেলের জুস তৈরির সময় বিচি যেন না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

Sort:  

কি বলেন এইসব
পান কই এই তথ্য

সাংবাদিকতা পেশায় যেহেতু কাজ করি, তাই তথ্য পাওয়া আমাদের জন্য সহজ। সকলের সচেতনতার জন্য পোষ্টগুলো দেই। ধন্যবাদ আপনাকে---

অনেক ধন্যবাদ আমাদের কে এই তথ্য জানানোর জন্য।

আপনাকেও স্বাগতম

তথ্যবহুল লেখা ও উপকারি পোস্ট

ধন্যবাদ